পাবনা শহর অঞ্চলের ভেতর দিয়ে প্রবাহমান ইছামতি নদী অবৈধভাবে দখল করে দূষণ সৃষ্টিকারিদের তালিকা চেয়েছে হাইকোর্ট। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে এ বিষয়ে তালিকা তৈরি করে তা প্রতিবেদন আকারে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রবিবার এক আবেদনের শুনানি করে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
পাশাপাশি ৮৪ কিলোমিটার ইছামতি নদীকে পরিবেশগত সংকটাপন্ন কেন ঘোষণা করা হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন আদালত। সিএস জরিপ/পর্চা অনুযায়ী নদীর সীমানা নির্ধারণ, দূষণ ও দখলমুক্ত করে দখলকারীদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়েছে।
ভূমি মন্ত্রণালয়ের সচিব, পরিবেশ সচিব, পানিসম্পদ সচিব, জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের চেয়ারম্যানসহ সংশ্লিষ্ট ১৬ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।
ইছামতি নদীর দখল, দূষণ নিয়ে বিভিন্ন পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। ওই সব প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ৫ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করে পরিবেশবাদী আইনজীবীদের সংগঠন বেলা। আবেদনের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন মিনহাজুল হক চৌধুরী। তাকে সহযোগিতা করেন সাঈদ আহমেদ কবির। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অমিত তালুকদার।
পরে সাঈদ আহমেদ কবির আদালত থেকে বেরিয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পাবনার জেলায় প্রবাহিত ইছামতি নদী এক সময় সচল ছিল। পাবনাবাসীর জন্য এটি ছিল আশির্বাদ। কিন্তু বর্জ্য ও দূষণে বর্তমানে নদীটি মৃতপ্রায়। নদী দখল ও বাঁধ দেওয়ায় নদীর মধ্যে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে নদী রক্ষায় আদালতে রিট করা হয়েছে। আদালত শুনানি নিয়ে রুল জারি করেছেন।
পত্রিকার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, উৎপত্তিস্থলে বাঁধ দেওয়ায় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে ইছামতি নদীর পানিপ্রবাহ। এরপর থেকে এ নদীর দুই পাশের নিচু জায়গা ও জলাভূমি বালু দিয়ে ভরাট করতে থাকে অবৈধ দখলদাররা।
স্থানীয়রা জানান, ইছামতি রক্ষার জন্য তারা নানা সময় মানববন্ধন, স্মারকলিপি দেওয়াসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছেন। কিন্তু দখলদারদের বিরুদ্ধে কার্যকর কোনও ব্যবস্থা নেয়নি প্রশাসন। তবে জেলা প্রশাসন বলছে, অবৈধ দখল উচ্ছেদের পাশপাশি শিগগিরই তারা নদী খনন কাজে হাত দিতে যাচ্ছে।